অফিস পলিটিক্স: বিস্তারিত আলোচনা
অফিস পলিটিকস্ কি?
অফিস
পলিটিকস্ (Office Politics) হল কর্মক্ষেত্রে ক্ষমতা,
প্রভাব,
এবং
ব্যক্তিগত স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মকৌশল, যা
কর্মীদের মধ্যে
সম্পর্ক, সিদ্ধান্ত গ্রহণ,
এবং
ক্যারিয়ার উন্নয়নে প্রভাব
ফেলে।
এটি
কখনো
ইতিবাচক হতে
পারে,
আবার
কখনো
নেতিবাচক প্রভাব
ফেলতে
পারে।
অফিস পলিটিক্সের ধরণ
১. ইতিবাচক অফিস পলিটিক্স
👉 টিমওয়ার্ক
ও সহযোগিতা বৃদ্ধি: কর্মীরা পারস্পরিক বোঝাপড়া ও
সংযোগ
তৈরির
মাধ্যমে কাজের
গুণগতমান উন্নত
করতে
পারে।
👉 দক্ষতা ও নেতৃত্ব বিকাশ: একজন কর্মী
তার
দক্ষতা
ও
প্রভাব
বৃদ্ধির মাধ্যমে ভালো
সুযোগ
পেতে
পারে।
👉 ক্যারিয়ার গ্রোথ: সুসম্পর্ক বজায়
রেখে,
যোগ্যতা ও
মেধার
মাধ্যমে ক্যারিয়ার এগিয়ে
নেওয়া
সম্ভব।
২. নেতিবাচক অফিস পলিটিক্স
⚠ গ্রুপবাজি ও পক্ষপাতিত্ব: নির্দিষ্ট কিছু
কর্মী
বা
গ্রুপকে বেশি
প্রাধান্য দেওয়া
হয়,
যা
অন্যদের প্রতি
অবিচার
সৃষ্টি
করতে
পারে।
⚠ গুজব ও কুতর্ক: ভুল তথ্য
ছড়ানো
এবং
একে
অপরের
বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা
অফিসের
পরিবেশ
নষ্ট
করতে
পারে।
⚠ ক্রেডিট নেওয়া: অনেক সময়
একজনের
করা
কাজের
ক্রেডিট অন্য
কেউ
নিয়ে
নেয়,
যা
অসন্তোষের সৃষ্টি
করতে
পারে।
⚠ বসের সাথে সম্পর্ক গড়ে প্রমোশন পাওয়া: যোগ্যতার চেয়ে
ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে সুযোগ
পাওয়া
অনৈতিক
প্রতিযোগিতা তৈরি
করে।
অফিস পলিটিক্স এর কারণ
🔹 ক্ষমতা
ও প্রতিযোগিতা: প্রতিষ্ঠানের ভেতরে
পদোন্নতি, বেতন
বৃদ্ধি,
বা
সুবিধা
পাওয়ার
জন্য
অনেকেই
কৌশল
গ্রহণ
করেন।
🔹 কমিউনিকেশনের ঘাটতি: সঠিক ও
স্বচ্ছ
যোগাযোগ না
থাকলে
ভুল
বোঝাবুঝি এবং
দ্বন্দ্ব তৈরি
হয়।
🔹 ব্যক্তিগত স্বার্থ: কেউ কেউ
ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষা
করতে
অন্যদের ক্ষতি
করতেও
পিছপা
হন
না।
🔹 সংস্কৃতি ও নেতৃত্বের ধরন: অফিসের সাংস্কৃতিক পরিবেশ
এবং
ম্যানেজমেন্টের কার্যক্রম অফিস
পলিটিকসকে প্রভাবিত করে।
কিভাবে নেতিবাচক অফিস পলিটিক্স এড়িয়ে চলবেন?
✅ পেশাদার আচরণ বজায় রাখুন – নিজের
কাজের
ওপর
মনোযোগ
দিন
এবং
অন্যদের সঙ্গে
সদাচরণ
করুন।
✅ নেতিবাচক গসিপ থেকে দূরে থাকুন – অফিসের
গুজবে
যুক্ত
না
হয়ে
পজিটিভ
আলোচনায় অংশ
নিন।
✅ সঠিক যোগাযোগ বজায় রাখুন – স্বচ্ছ
ও
পরিষ্কার কমিউনিকেশনের মাধ্যমে ভুল
বোঝাবুঝি এড়ান।
✅ যোগ্যতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করুন – নিজের
কাজের
দক্ষতা
বাড়িয়ে
যোগ্যতার ভিত্তিতে ক্যারিয়ার গড়ে
তুলুন।
✅ বিশ্বস্ত সম্পর্ক গড়ে তুলুন – অফিসের
সহকর্মীদের সঙ্গে
সুসম্পর্ক তৈরি
করুন,
যাতে
নেতিবাচক রাজনীতির শিকার
না
হতে
হয়।
✅ বস বা সিনিয়রদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন – তবে
তোষামোদ বা
অযথা
পক্ষপাতিত্ব করবেন
না।
✅ সহনশীলতা ও ধৈর্য্য বজায় রাখুন – অফিস
পলিটিকসের শিকার
হলেও
তা
নিয়ে
আবেগপ্রবণ না
হয়ে
কৌশলগত
সিদ্ধান্ত নিন।
কিভাবে অফিস পলিটিক্সের ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করবেন?
✔
নেতৃত্বের গুণাবলী তৈরি করুন: নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করুন
যাতে
সহকর্মীরা আপনাকে
সম্মান
করে।
✔ নেটওয়ার্কিং বাড়ান: অফিসে সবার
সঙ্গে
সুসম্পর্ক গড়ে
তুলুন,
যাতে
কাজের
সুযোগ
ও
সহযোগিতা পান।
✔ কৌশলী হন: অন্যদের আচরণ
বুঝে
বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে
সিদ্ধান্ত নিন।
✔ অন্যের সাফল্যে খুশি হন: ঈর্ষাপরায়ণ না
হয়ে
অন্যদের সাফল্যকে সম্মান
করুন।
উপসংহার
অফিস
পলিটিকস এড়িয়ে
চলা
প্রায়
অসম্ভব,
তবে
বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে
মোকাবিলা করলে
এটি
ক্যারিয়ারে ইতিবাচক ভূমিকা
রাখতে
পারে।
সততা,
নৈতিকতা ও
পেশাদারিত্ব বজায়
রেখে
কাজ
করলে
কর্মক্ষেত্রে সুস্থ
ও
সফলভাবে টিকে
থাকা
সম্ভব।
আপনার অফিস পলিটিকস সংক্রান্ত কোনো নির্দিষ্ট সমস্যা থাকলে তা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন!
0 Comments